আইএমএফের ঋণ কিস্তি আরও পিছিয়েছে, একসঙ্গে আসবে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি

আপলোড সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৯:৩৯:৪১ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৭-০২-২০২৫ ০৯:৩৯:৪১ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের সাথে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ কিস্তির ৬৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার ছাড় আরও বিলম্বিত হয়েছে। আগামী জুনে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব একসঙ্গে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় তোলা হবে বলে জানিয়েছেন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

চলতি মাসের ৫ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের নির্বাহী পর্ষদের বৈঠকে চতুর্থ কিস্তির প্রস্তাব তোলার কথা ছিল। কিন্তু সেটি পিছিয়ে ১২ মার্চ করা হয়। এখন আবার তা আরও পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে, যা আগামী জুনে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া বোর্ড সভায় তোলা হবে।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আইএমএফের সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়েছে। কিছু শর্ত ও কাজ রয়েছে, যা পূরণ করার প্রক্রিয়ায় আছি। আমরা তাড়া দিচ্ছি না। বরং অপেক্ষা করব এবং আশা করছি, একসঙ্গে দুই কিস্তির অর্থ ছাড় পাবে বাংলাদেশ।”

বাংলাদেশ ২০২৩ সালে আইএমএফের কাছ থেকে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণ প্যাকেজ অনুমোদন করায়, যা পর্যায়ক্রমে কিস্তিতে দিচ্ছে সংস্থাটি। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ বাংলাদেশ পেয়েছে। তবে তৃতীয় কিস্তির জন্য বেশ কিছু অর্থনৈতিক শর্ত পূরণ করতে হয়েছে, যার মধ্যে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অন্যতম।চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি পেতে বাংলাদেশকে রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংরক্ষণ এবং মুদ্রানীতি স্থিতিশীল করা– এসব বিষয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তবে সরকার বলছে, আইএমএফের কিছু শর্ত কঠোর হলেও, তারা অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ঋণ প্রদান করছে।

বিশ্লেষকদের মতে, আইএমএফের ঋণ পেতে হলে ডলার সংকট নিরসন, ব্যাংকিং খাতের সংস্কার, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও রাজস্ব আহরণ বাড়ানো—এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ঋণ ছাড়ে বিলম্ব হওয়া মানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যবস্থাপনায় চ্যালেঞ্জ আরও বাড়বে। তবে একসঙ্গে দুই কিস্তি ছাড় পেলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে স্বস্তি আসতে পারে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, আগামী মাসগুলোতে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানো এবং রপ্তানি আয়কে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, আমদানি ব্যয় কমিয়ে রিজার্ভকে স্থিতিশীল রাখার পরিকল্পনা করছে সরকার।বিশ্লেষকরা বলছেন, আইএমএফের ঋণ শুধুমাত্র তহবিল সংকট কাটানোর জন্য নয়, বরং এটি একটি সংস্কারমূলক ঋণ, যা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে। তবে শর্ত পূরণের চাপে ভর্তুকি ও সরকারি ব্যয় ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনতে হতে পারে।

সিদ্ধান্ত যাই হোক, আইএমএফের ঋণ ছাড়ের বিলম্ব ও একসঙ্গে দুই কিস্তি পাওয়ার বিষয়টি বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, যা আগামী মাসগুলোতে পরিষ্কার হয়ে উঠবে।

Editor & Publisher

Mehedi Hasan Limon

Address

House 22, Main Road, Block G, Banasree, Dhaka, Bangladesh 1219
Mobile : 01711-000000
Email Address : banglanewslive24@gmail.com